ঢাকা রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১
সারাবাংলা

নারী চক্রে ফাঁসলেন ব্যাংক কর্মকর্তা, নারীসহ গ্রেপ্তার ৪

প্রকাশ: ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২১, ০৫:১২ পিএম

Sports Banner
নারী চক্রে ফাঁসলেন ব্যাংক কর্মকর্তা, নারীসহ গ্রেপ্তার ৪

এখন অহরহই নারী দিয়ে পাতা হচ্ছে ফাঁদ রাজশাহী মহানগরীতে। সক্রিয় রয়েছে এসব বেশকিছু চক্র। এসব চক্রের নারী সদস্যরা  টার্গেট করা ব্যক্তিকে বাসায় ডাকছেন কখনও প্রেমের ফাঁদে ফেলে কখনও সময় কাটানোর নামে। তারপর বাসায় গেলেই দেখানো হচ্ছে তাদের আসল রূপ।


হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা। সবশেষ একজন ব্যাংক কর্মকর্তা এমন মধুচক্রের ফাঁদে পড়লেন। তিনি রাষ্ট্রায়ত্ত একটি ব্যাংকের রাজশাহীর একটি শাখার ব্যবস্থাপক। তাকে নারীচক্রের ভাড়া বাসা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। একই সাথে এক নারীসহ চারজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।

যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে- রাজশাহীর চারঘাটের মনোয়ার হোসেন (৩৬), সেলিনা আক্তার ওরফে সাথী (২৫), খাইরুল ইসলাম (২৬) এবং পটুয়াখালীর রাংগাবালীর তুহিন সরকার (৩২)। এদের মধ্যে মনোয়ার হোসেন চক্রের মূল পরিকল্পনাকারী।

এদের গ্রেপ্তারের পর আজ শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক নিজের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। আবু কালাম সিদ্দিক জানান, মনোয়ার হোসেন ও সাথী নিজেদের স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে ২৬ জানুয়ারি নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার হড়গ্রাম নতুনপাড়া রানীদিঘি এলাকার একটি ভবনের তৃতীয় তলা ভাড়া নেন। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সাথী গত বৃহস্পতিবার ভুক্তভোগী ওই ব্যাংক কর্মকর্তাকে এ বাসায় ডেকে নেন।

আরো পড়ুন: গর্ভধারিণী মাকে পিটিয়ে আহত করলেন কুলাঙ্গার ছেলে

এ সময় পাশের ঘরে লুকিয়ে ছিলেন মনোয়ার, খাইরুল ও তুহিন। সাথী এবং ওই ব্যাংক কর্মকর্তা যখন একইঘরে ছিলেন, তখন এরা সেই ঘরে যান। এ সময় মনোয়ার ডিবি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে, খাইরুল পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্য হিসেবে এবং তুহিন সাংবাদিক হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেন। মনোয়ার ও খাইরুল ওই ব্যাংক কর্মকর্তাকে নারীসহ গ্রেপ্তার করতে চান। খাইরুল ভুক্তভোগীর হাতে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে দেন। মনোয়ার ভুক্তভোগীর পেছনে নকল পিস্তল ঠেকিয়ে যা আছে দিয়ে দিতে বলেন। আর তুহিন হুমকি দেন টাকা না দিলে নারীসহ ভুক্তভোগীর ছবি পত্রিকায় ছাপিয়ে দেবেন।

আরো পড়ুন: রাজবাড়ীতে কিশোরীকে ধর্ষণ করলো ফুফা

ওই ব্যাংক কর্মকর্তা তার কাছে থাকা ২৬ হাজার টাকা দিয়ে দেন এমন পরিস্থিতিতে। এছাড়াও পরিবারের সদস্য ও সহকর্মীদের কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে আরও ৪৪ হাজার টাকা এনে দেন। তারপরও তাকে ছাড়া হয়নি। এদিকে বিকাশের মাধ্যমে এভাবে টাকা নেয়ায় ওই ব্যাংক কর্মকর্তার একজন সহকর্মী আঁচ করেন তিনি বিপদে পড়েছেন। তিনি ছুটে যান আরএমপির ডিবি কার্যালয়ে। তার দেয়া মৌখিক তথ্যে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে ডিবি পুলিশ অভিযান চালায়। অভিযানে ভুক্তভোগীকে উদ্ধারের পাশাপাশি বাসা থেকে চারজনকে আটক করা হয়।

আরো পড়ুন: টাকার মেশিন এমপি নূর মোহাম্মদের বিকাশ নাম্বার!

আরএমপি কমিশনার সংবাদ মাধ্যমকে জানান, প্রতারকরা প্রায় এক মাস আগে বাসাটি ভাড়া নিয়েছেন। কিন্তু তারা নিয়মিত বাসায় থাকতেন না। এই বাসায় তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের নারী দিয়ে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসিয়ে ভুয়া ডিবি ও সাংবাদিক পরিচয়ে ব্ল্যাকমেইল করতেন।

নগর পুলিশের কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক জানান, গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে নকল পিস্তল, হ্যান্ডকাফ, ভুয়া ডিবি জ্যাকেট, ছয়টি মোবাইল সেট, নয়টি সিমকার্ড, বিদেশি নোট এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের ভিজিটিং কার্ড জব্দ করা হয়েছে। ভুক্তভোগীর কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া টাকার মধ্যে সাড়ে ১৫ হাজার টাকাও উদ্ধার করা হয়েছে। আর চারজনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে 

সারাবাংলা বিভাগের আরো খবর