ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৯ মে, ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১
সারাবাংলা

শিক্ষক করলেন যৌন নির্যাতন, বিচার চাওয়ায় অধ্যক্ষ দিলেন পিটুনি

প্রকাশ: মার্চ ২, ২০২১, ০৯:২৭ এএম

Sports Banner
শিক্ষক করলেন যৌন নির্যাতন, বিচার চাওয়ায় অধ্যক্ষ দিলেন পিটুনি

লক্ষ্মীপুরে ১০ বছরের এক মাদরাসাছাত্রকে যৌন নির্যাতন করা হয়। সেই বিচার চাওয়ায় পিটুনির শিকার হয়েছে শিশুটি। এ ঘটনায় দুই শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে।

যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে- মাদরাসার অধ্যক্ষ আব্দুর রশিদ মোহাম্মদ ইউসুফ ও যৌন নির্যাতনকারী মাসুম বিল্লাহ।

গত সোমবার (১ মার্চ) সন্ধ্যায় সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ বাজার এলাকার আত্-তামরীন ইন্টারন্যাশনাল হিফযুল কুরআন মাদরাসা থেকে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। ওই শিশুর মা বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে চন্দ্রগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন।

এজাহার সূত্র জানা গেছে, শিশুটি আত্-তামরীন ইন্টারন্যাশনাল হিফযুল কুরআন মাদরাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র। মাদরাসায় আবাসিক থেকে সে পড়ালেখা করত। এ সুযোগে রাতে ঘুম থেকে তুলে খাওয়ার রুমে ডেকে নিয়ে শিক্ষক মাসুম বিল্লাহ কয়েকদিন তাকে যৌন নির্যাতন করেন। ঘটনাটি কাউকে জানালে তাকে প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়।

সম্প্রতি মাদরাসা ৭ দিনের জন্য ছুটি দিলে শিশুটি অন্যদের মতো বাড়িতে যায়। পরবর্তীতে মাদরাসা খোলা হলেও সে ফিরতে অস্বীকৃতি জানায়। কিন্তু মা তাকে যেতে বাধ্য করলে শিশুটি তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনা মাকে জানায়।

২৬ ফেব্রুয়ারি বিকেলে শিশুটির মা ও আত্নীয় স্বজন মাদরাসায় গিয়ে অধ্যক্ষ আব্দুর রশিদকে ঘটনাটি অবহিত করেন। এটি তদন্ত করে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ পরবর্তীকালে এমন ঘটনা যেন না ঘটে এজন্য প্রতিশ্রুতি চান।

কিন্তু অধ্যক্ষ ওই ঘটনার কোনো তদন্ত না করেই উল্টো ঘটনা প্রকাশ করে মাদরাসার সুনাম ক্ষুণ্ন করার অভিযোগে পরদিন শিশুটিকে বেদম পিটিয়ে আটকে রাখেন। গত সোমবার মুঠোফোনে এমন খবর পেয়ে শিশুটির মা ও আত্নীয়-স্বজন মাদরাসায় গিয়ে তাকে আহত অবস্থায় দেখতে পান এবং পুলিশে খবর দেন।

শিশুটির শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পুলিশ এসে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে আব্দুর রশিদ ও মাসুম বিল্লাহকে আটক করে। পরে এ ঘটনায় শিশুর মা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় দুই শিক্ষককে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

শিশুটির মা সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আমার ছেলের সঙ্গে শিক্ষকরা খুব খারাপ কাজ করেছে। আমি অধ্যক্ষের কাছে বিচার চেয়েছি। কিন্তু তিনি আমার ছেলেকে পিটিয়ে জখম করেছেন। আমি তাদের উপযুক্ত বিচার চাই।

চন্দ্রগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কামাল উদ্দিন সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। জড়িত দুই শিক্ষককে তাৎক্ষণিক আটক করা হয়।

এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একে ফজলুল হক বলেন, শিশুর মায়ের দায়ের করা মামলায় আটক দুই শিক্ষককে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। মঙ্গলবার (২ মার্চ) তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।

সারাবাংলা বিভাগের আরো খবর