ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
আইন-আদালত অভিযোগ পেলেই মামলা বা গ্রেপ্তার নয়: আইনমন্ত্রী

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পরিবর্তন আসছে

প্রকাশ: মার্চ ২, ২০২১, ০৯:১৫ এএম

Sports Banner
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পরিবর্তন আসছে
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক | ফাইল ছবি

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন গ্রেপ্তার থাকা লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর ঘটনার পর আইনটি নিয়ে আবার বিতর্ক দেখা দিয়েছে। তার মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে সরকার এখন আইনটির অপপ্রয়োগ বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলছে। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বিবিসিকে বলেছেন, এই আইনে কোনো অপরাধের অভিযোগ এলে পুলিশের তদন্তের আগে কাউকে গ্রেপ্তার করা যাবে না বা তার বিরুদ্ধে মামলা নেওয়া যাবে না- এমন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

এই আইনে ৯ মাস ধরে আটক থাকা লেখক মুশতাকের মৃত্যুর পর অভিযোগ উঠেছে যে, ছয়বার আবেদন করেও তার জামিন মেলেনি। এমন প্রেক্ষাপটে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, তদন্তের আগে মামলা নেওয়া বা কাউকে গ্রেপ্তার করা যাবে না, এমন ব্যবস্থা তারা নিচ্ছেন। তিনি বলেন, 'আমরা বলেছি যে, সরাসরি মামলা নেওয়া হবে না। কোনো অভিযোগ এলে পুলিশ প্রথমে তদন্ত করে দেখবে এবং তদন্তসাপেক্ষে তারপর মামলা নেওয়া হবে।'

কিন্তু আইনটি প্রণয়নের পর থেকে কোনো অভিযোগ এলেই পুলিশ মামলা নিয়ে সঙ্গে সঙ্গেই অভিযুক্তকে আটক করছে। এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে আইনমন্ত্রী বলেছেন, 'আগে যাতে আটক না করে এবং তদন্তের জন্য যেন অপেক্ষা করে- সেই জায়গায় আসার জন্য আমরা চেষ্টা করছি।' জামিন হওয়া না হওয়ার প্রশ্নে মন্ত্রী বলেছেন, 'সাজা যতটা হলে জামিন হবে এবং যতটা হলে জামিন হবে না- ঠিক সেই প্রিন্সিপালটা ফলো করে আমরা বিধান করেছি। সারা পৃথিবীতেই এটা করা হয়। এমনকি এই উপমহাদেশেও। বিষয়টি নিয়ে আমরা আলাপ-আলোচনা করছি।'

আইনের অব্যাহত অপপ্রয়োগ অভিযোগের ব্যাপারে আইনমন্ত্রী বলেছেন, তারা ব্যবস্থা নিচ্ছেন। সব আইনই যখন করা হয়, তখন কিন্তু একটা ট্রায়াল অ্যান্ড এরর বা পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে যায়। কথা হচ্ছে, এখানে যদি কিছু অ্যাবিউজ এবং মিসইউজ হয়, সেটা কী করে বন্ধ করা হবে- সে ব্যাপারে ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি।

আনিসুল হক বিষয়টি নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের সঙ্গেও আলোচনা করার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, 'জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের অফিসের সঙ্গে আমি আলাপ চালাচ্ছি। সারা বিশ্বের সঙ্গে আমরা এটার তুলনা করছি। মিসইউজ যেগুলো ধরা পড়ছে বা অ্যাবিউজ যেগুলো হচ্ছে, সেগুলোর জন্য একটা চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স সিস্টেম কীভাবে ডেভেলপ করা যায়, এই আইনের মধ্যেই কীভাবে সেটা থাকতে পারে- সেই ব্যবস্থা আমরা করছি।' তিনি মনে করেন, এসব ব্যবস্থা নিতে আইনের সংশোধনের প্রয়োজন নাও হতে পারে এবং বিধির মাধ্যমে সেটা করা যেতে পারে।

মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বা বাকস্বাধীনতা খর্ব করার অভিযোগ মানতে রাজি নন আইনমন্ত্রী এবং সরকারের অন্য মন্ত্রীরাও। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং সিনিয়র মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে তাদের সরকার এবং দলের উচ্চ পর্যায়ে তারা আলোচনা করছেন। তবে ডিজিটাল দুনিয়ায় নানা অপরাধের প্রেক্ষাপটে আইনটির প্রয়োজন আছে বলেই তাদের দল এবং সরকার মনে করছে।

ড. রাজ্জাক বলেন, আইনের অপব্যবহার হচ্ছে কিনা, সেটা আমরা অবশ্যই পর্যালোচনা করছি। এটা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনাও হচ্ছে। তার পরও সঙ্গে সঙ্গে এটাও আমাদের চিন্তা করতে হচ্ছে যে, প্রযুক্তিগত এই সুযোগ বা সুবিধাকে আমরা অপব্যবহার করছি কিনা এবং দেশের উন্নয়ন ও শান্তি আমরা বিঘ্নিত করছি কিনা- এটাও আমাদের দেখতে হচ্ছে।'

সুত্র: বিবিসি

আইন-আদালত বিভাগের আরো খবর